“ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলা: ভারতের রাজনীতিতে প্রতিহিংসা না কি দুর্নীতির তদন্ত?”

print news
img

ভারতের ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী ও রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) অভিযোগপত্র দাখিলের পর বিরোধী দল কংগ্রেস এটিকে ‘প্রতিহিংসার রাজনীতি’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। কংগ্রেসের ভাষ্যমতে, এই মামলা একটি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বহিঃপ্রকাশ, যেখানে আইনের ছত্রছায়ায় সরকার বিরোধীদের দমন করছে। তারা বলছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার ইডিকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে বিরোধী কণ্ঠ রোধ করতে চাইছে। এই মামলার প্রেক্ষিতে কংগ্রেস নেতারা একে ‘রাজনৈতিক গুন্ডামি’ এবং ‘প্রশাসনিক সন্ত্রাস’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

মামলায় অভিযোগ উঠেছে, গান্ধীরা মাত্র ৫০ লাখ রুপির বিনিময়ে ন্যাশনাল হেরাল্ড পত্রিকার প্রকাশক এজেএল-এর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ২০০০ কোটি রুপির সম্পত্তি অবৈধভাবে দখল করেছেন। যদিও কংগ্রেস দাবি করেছে, ঐতিহাসিক গুরুত্বসম্পন্ন এই পত্রিকাটিকে বাঁচিয়ে রাখতে তারা আর্থিক সহায়তা করেছে এবং কোনো বেআইনি লেনদেন হয়নি। বিজেপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, তদন্ত সংস্থা ও বিচারব্যবস্থা স্বাধীনভাবেই কাজ করছে এবং দুর্নীতির দায় এড়ানোর সুযোগ কারও নেই।

এই মামলার সময় ও প্রেক্ষাপটও প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। ভারতের জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরোধী শিবিরের শীর্ষ নেতৃত্বকে আদালতে টেনে আনা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেই কংগ্রেসের অভিযোগ। এর ফলে বিচারব্যবস্থার নিরপেক্ষতা ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বচ্ছতা নিয়ে জনমনে সন্দেহ তৈরি হচ্ছে। সমালোচকরা বলছেন, দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে বিরোধীদল দমন করতে রাষ্ট্রযন্ত্রের অপব্যবহারের একটি প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে।

বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর জন্য এই পরিস্থিতি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে। এখানে দীর্ঘদিন ধরেই বিরোধী দলের বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেফতার ও হয়রানির অভিযোগ রয়েছে, এবং ভারতীয় উদাহরণ সেই বিতর্ককে আরও প্রাসঙ্গিক করে তোলে। ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলার পরিণতি শুধু ভারতের গণতন্ত্র নয়, গোটা উপমহাদেশে রাজনৈতিক প্রতিযোগিতার স্বচ্ছতা এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তুলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *