

ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমীনের নেতৃত্বে আত্মপ্রকাশ করেছে নতুন রাজনৈতিক দল ‘আ-আম জনতা পার্টি’। বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে দলটির যাত্রা শুরু হয়। দলের আহ্বায়ক রফিকুল আমীন এই অনুষ্ঠানে দলটির ঘোষণাপত্র পাঠ করে শোনান এবং দেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের জন্য দলটির লক্ষ্য ও পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন।
রফিকুল আমীন বলেন, স্বাধীনতা অর্জনের ৫৪ বছর পরেও দেশের জনগণ বৈষম্য ও বঞ্চনার শিকার। এই অবস্থার পরিবর্তন আনতে এবং মানুষের মৌলিক ও রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় আ-আম জনতা পার্টি অগ্রণী ভূমিকা রাখতে চায়। দেশপ্রেমের মন্ত্রে উদ্বুদ্ধ হয়ে দলটি সুশাসন প্রতিষ্ঠা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, ভারসাম্যপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি, অসাম্প্রদায়িক সমাজ গঠন এবং সরকারি অফিস-আদালতে ডিজিটালাইজেশনসহ একাধিক সময়োপযোগী কর্মসূচি বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
ঘোষণাপত্রে বলা হয়, দলটি বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা, সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত এবং জনগণকে রাজনৈতিকভাবে সচেতন করতে কাজ করবে। ক্ষমতা দখলের রাজনীতি নয় বরং যোগ্য নাগরিক ও ভোটারের মাধ্যমে প্রকৃত জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করে রাষ্ট্র পরিচালনার মডেল প্রতিষ্ঠা করাই দলের অন্যতম উদ্দেশ্য। মুক্তিযুদ্ধ ও ২৪ জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে তারা দুর্নীতি, সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ, সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধ এবং নারীর ক্ষমতায়ন ও জেন্ডার সমতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করবে।
দলটির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গীকার হলো অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। এর জন্য উৎপাদনমুখী কৃষি, কর্মমুখী শিক্ষা, প্রযুক্তিনির্ভর উন্নয়ন এবং মুক্তবাজার অর্থনীতির বাস্তবায়নের কথা বলা হয়েছে। জাতীয় সমৃদ্ধির লক্ষ্যে তারা বৈশ্বিক সাম্রাজ্যবাদ, নয়া উপনিবেশবাদ ও আধিপত্যবাদ প্রতিরোধে দৃঢ় পররাষ্ট্রনীতি ও শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গঠনের প্রতিশ্রুতি দেয়।
গ্রামীণ উন্নয়নের ক্ষেত্রেও আ-আম জনতা পার্টি সক্রিয় ভূমিকা রাখতে চায়। খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার চাহিদা পূরণে পল্লী উন্নয়ন কর্মসূচির বাস্তবায়নকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। বহুদলীয় রাজনীতি, গণতন্ত্র, সংসদীয় শাসন ব্যবস্থা ও দলীয় অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র চর্চার প্রতিও দলটি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকবে। পরিবারভিত্তিক নেতৃত্ব বর্জন করে প্রকৃত নেতৃত্ব গঠনের অঙ্গীকারও ঘোষণা করে তারা।
সংবিধানে মৌলিক মানবাধিকার সংরক্ষণ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং নির্বাহী বিভাগ থেকে এর পৃথকীকরণ, প্রভাবমুক্ত বিচার কার্যক্রম, প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগসহ সুবিচার নিশ্চিত করার পরিকল্পনা ঘোষণা করে দলটি। এছাড়া দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন গঠনের মাধ্যমে কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ইত্যাদি জনগুরুত্বপূর্ণ খাতের উন্নয়ন এবং জনগণের সেবা সহজলভ্য করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।
আন্তর্জাতিক পরিসরে দলটি জোট নিরপেক্ষ অবস্থান গ্রহণের মাধ্যমে প্রতিবেশী ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর সঙ্গে ন্যায়ের ভিত্তিতে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার অঙ্গীকার করে। সার্বিকভাবে আ-আম জনতা পার্টি একটি নতুন রাজনৈতিক ধারা হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করতে চায়, যারা দেশ, জনগণ ও ভবিষ্যতের প্রতি দায়বদ্ধ থেকে রাজনীতি করবে।