

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ২০২৪ সালের জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থান কেবল কোনো ব্যক্তির পরিবর্তনের আন্দোলন ছিল না। এটি ক্ষমতা থেকে একটি দলকে সরিয়ে আরেকটি দলকে বসানোর পরিকল্পনার অংশও ছিল না। বরং এটি ছিল রাষ্ট্রকাঠামোর মৌলিক ও গুণগত পরিবর্তনের মাধ্যমে জনগণের অধিকার রক্ষায় একটি নতুন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্পষ্ট আকাঙ্ক্ষা। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ধারাবাহিকতায় তরুণপ্রজন্মের ভিত্তিতে গঠিত হয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এই রাজনৈতিক শক্তির মূল লক্ষ্য ফ্যাসিবাদী শাসন ব্যবস্থার বিলোপ ও একটি নতুন গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠা। তিনি বলেন, “আমরা ৯০-এর গণঅভ্যুত্থানের ইতিহাস বইয়ে পড়েছি, কিন্তু তা কাঙ্ক্ষিত রাষ্ট্র পরিবর্তন আনতে ব্যর্থ হয়েছে। সেই ব্যর্থতার কারণেই ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসনের পথ উন্মুক্ত হয়েছিল। এবারের আন্দোলন যেন কোনোভাবেই ব্যর্থ না হয়, এটা আমাদের জাতীয় অঙ্গীকার।”
তিনি আরও বলেন, “সংবিধান থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে যেভাবে দলীয়করণ হয়েছে, তাতে যে-ই ক্ষমতায় আসুক, ফ্যাসিবাদী প্রবণতা থেকেই যাবে। তাই সংবিধান, প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা, বিচারব্যবস্থা ও নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল সংস্কার ছাড়া গুণগত পরিবর্তন সম্ভব নয়।” এসময় তিনি বলেন, বর্তমানে যে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, তা কাজে লাগাতে হলে জাতীয় ঐকমত্য ও একটি ‘জুলাই সনদ’ অত্যাবশ্যক।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফররাজ হোসেন এবং ড. ইফতেখারুজ্জামান। এনসিপির পক্ষে উপস্থিত ছিলেন নাহিদ ইসলাম, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব নাহিদা সারোয়ার নিভা এবং যুগ্ম আহ্বায়ক জাভেদ রাসেল।