

জাতীয় নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, “নির্বাচনের দাবি করা কোনো অপরাধ নয়, বরং এটি একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের মৌলিক অধিকার ও দায়িত্ব।” গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে ‘আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির’ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, “রাজনৈতিক দল নির্বাচনের দাবি তুলবে, এটিই স্বাভাবিক গণতান্ত্রিক চর্চা। কিন্তু এখন এমন একটি পরিবেশ তৈরি হচ্ছে, যেন এই দাবি করাটাই অপরাধ। এই প্রেক্ষাপট স্বৈরাচারীদের জন্য সুখবর হলেও গণতন্ত্রকামীদের জন্য অপমানজনক।”
তারেক রহমান অভিযোগ করেন, “পলাতক স্বৈরাচার সংবিধান লঙ্ঘন করে জনগণের ভোট ছাড়া তিনবার অবৈধ সংসদ ও সরকার গঠন করেছে। এখন সেই অপশক্তিকে পুনর্বাসনের সুযোগ তৈরির চেষ্টা চলছে।” তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করে আসলে জাতীয় নির্বাচনের গুরুত্বকে খাটো করা হচ্ছে এবং পলাতকদের পুনর্বাসনের পথ তৈরি করা হচ্ছে। “যারা এই নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করছেন, তারা হয়তো বিষয়টি এভাবে দেখেননি, কিন্তু আমি তাদের অনুরোধ করব, বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করার।”
তিনি আরও বলেন, “রাষ্ট্র ও রাজনীতি সংস্কারের কথা বলা হলেও, যদি নির্বাচনকে উপেক্ষা করা হয়, তবে সেই সংস্কারের অর্থহীনতা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠবেই।” তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলোকে উপেক্ষা করে এবং জনগণের ভোটকে অস্বীকার করে কোনো সংস্কার কার্যকর হতে পারে না। বরং তা গণতন্ত্রকে আরও দুর্বল করবে।”
তারেক রহমান বলেন, “২০২৪ সাল দেশের গণতান্ত্রিক পুনর্জাগরণের বছর। যেমন ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছিল, তেমনই ২০২৪ সাল দেশের ও জনগণের স্বাধীনতা রক্ষার বছর হিসেবে ইতিহাসে লেখা থাকবে।” তিনি বলেন, “বাংলাদেশ কোনোদিন দিল্লির তাঁবেদার রাষ্ট্রে পরিণত হবে না, আর কোনো অপশক্তিকে সে সুযোগ দেওয়া হবে না।”
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, গণঅধিকার পরিষদের নুরুল হক নুর, খেলাফত মজলিসের মামুনুল হকসহ বিভিন্ন নতুন ও বিকল্পধারার রাজনৈতিক দলের নেতারা। বক্তারা সবাই জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার আহ্বান জানান এবং রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যবদ্ধ হওয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
চলমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তারেক রহমানের এই বক্তব্য ক্ষমতাসীনদের ওপর চাপ তৈরির পাশাপাশি বৃহত্তর রাজনৈতিক ঐক্য গঠনের কৌশলের অংশ বলেই বিশ্লেষকদের অভিমত।