র‌্যাব কর্মকর্তা পলাশের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন, স্ত্রী সুশ্মিতার বিচার দাবি এলাকাবাসীর

print news
img

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার পাড়কোনা মহাশ্মশানে বৃহস্পতিবার (৮ মে) দুপুরে র‍্যাব-৭-এর সিনিয়র এএসপি পলাশ সাহার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। এ সময় স্বজনদের কান্না, এলাকাবাসীর শোক আর বিচার চাওয়ার দাবিতে ভারী হয়ে ওঠে তার নিজগ্রাম তারাশির পরিবেশ।

সকাল ১০টার দিকে পলাশ সাহার মরদেহবাহী ফ্রিজিং গাড়ি তার গ্রামের বাড়িতে পৌঁছালে শত শত মানুষ তাকে শেষবারের মতো দেখতে ভিড় করেন। পরিবারের সদস্যরা এএসপি পলাশের মৃত্যুকে ‘অস্বাভাবিক’ দাবি করে এর জন্য স্ত্রী সুশ্মিতাকে দায়ী করেন এবং তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানান।

পরিবার ও এলাকাবাসীর অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই পলাশের স্ত্রী তার মাকে সহ্য করতে পারতেন না এবং তাকে আলাদা করে বাড়ি পাঠিয়ে দিতে চাপ সৃষ্টি করতেন। পলাশের মা রমারানী সাহা বলেন,

“মারধর, গালিগালাজ, রাতভর ঝগড়া—এসব সহ্য করতে হতো আমার ছেলেকে। পলাশ ঠিকমতো ঘুমাতে পর্যন্ত পারত না। আমি বোঝাতে চেয়েছিলাম, কিন্তু ছেলের বউ আমাকেও অপমান করতো।”

পলাশের বড় ভাই নন্দ লাল সাহা বলেন,

“আমার ভাই মাকে ভালোবাসত, এটা তার অপরাধ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। স্ত্রী সুশ্মিতা বারবার আত্মহত্যার হুমকি দিত, ঘর থেকে বেরিয়ে ভয় দেখাত। মৃত্যুর দিনও সে পলাশ ও মাকে মারধর করে। আমরা সুশ্মিতার গ্রেফতার ও বিচারের দাবি জানাচ্ছি।”

এলাকাবাসীরাও পলাশ সাহার মৃত্যুতে শোকাহত। তারা বলেন,

“পলাশ সাহা ছিলেন অত্যন্ত ভদ্র, শান্ত ও মেধাবী একজন মানুষ। এমন একজন নিরীহ মানুষ কীভাবে মারা গেলেন, তার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার না হলে সমাজে অন্যায়ের মাত্রা আরও বাড়বে।”

র‍্যাব-৬ এর পক্ষ থেকে পলাশের মরদেহে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এরপর পুলিশ বাহিনী সম্মান জানায়। দুপুরে স্থানীয় পাড়কোনা মহাশ্মশানে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।

পলাশ সাহা ছিলেন কোটালীপাড়ার তারাশী গ্রামের প্রয়াত শিক্ষক বিনয় কৃষ্ণ সাহার কনিষ্ঠ পুত্র। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনিই ছিলেন সবার ছোট। চাকরির সুবাদে তিনি চট্টগ্রামের চান্দগাঁও র‍্যাব ক্যাম্পে কর্মরত ছিলেন এবং মা ও স্ত্রীকে নিয়েই সেখানে বসবাস করতেন। গত বুধবার চান্দগাঁও র‍্যাব ক্যাম্পের তৃতীয় তলা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *