

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শিক্ষক ও ছাত্রীর আপত্তিকর অবস্থায় আটকের ঘটনায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের দিন রবিবার সন্ধ্যায় ফাইন্যান্স বিভাগের এক সহযোগী অধ্যাপককে এক ছাত্রীসহ তার চেম্বারে হাতেনাতে আটক করে শিক্ষার্থীরা। ঘটনাটি প্রথমে গোপন থাকলেও বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে তা জনসমক্ষে আসে এবং সমালোচনার ঝড় ওঠে।
অভিযুক্ত শিক্ষক মোহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এবং আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ’-এর সক্রিয় সদস্য। তাকে জুলাই মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরোধিতায় দেখা গিয়েছিল। যে ছাত্রী তার সঙ্গে ছিলেন, তিনি একই বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের স্নাতকোত্তর (এমবিএ) শিক্ষার্থী।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রবিবার বিকেল ৫টার দিকে ওই শিক্ষক ছাত্রীকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অ্যাকাডেমিক ভবনের ৩০৭ নম্বর কক্ষে প্রবেশ করেন এবং ভেতর থেকে বাতি নিভিয়ে দেন। সন্ধ্যায় সাড়ে ৭টার দিকে সন্দেহ হলে কয়েকজন শিক্ষার্থী দরজায় নক করেন। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর দরজা খোলা হয়। কক্ষে ঢুকে দেখা যায়, ছাত্রীটির হিজাব ও ওড়না ছিল না, ব্যাগ ও সেফটিপিন ছিল শিক্ষকের টেবিলে, এবং কক্ষে একটি বালিশও রাখা ছিল।
শিক্ষার্থীরা ভিডিও ধারণের সময় দেখা যায়, শিক্ষক ছাত্রীটির মাথায় রুমাল পরিয়ে দিচ্ছেন। শিক্ষার্থীরা এর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, “সে মেয়ে মানুষ, তাই।” দীর্ঘক্ষণ কথাবার্তার পর ঘটনাটি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে আপাত মীমাংসা হয়।
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত শিক্ষক মোহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহ ফোন ধরেননি। ফাইন্যান্স বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মো. শিবলী সাদিক জানান, ওই শিক্ষক এর আগেও এক ছাত্রীর কাছ থেকে যৌন হয়রানির অভিযোগ পেয়েছিলেন, যা আগের সভাপতির সময় আপস-মীমাংসা হয়েছিল। তবে সর্বশেষ ঘটনায় তিনি কিছু জানেন না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মো. মাহবুবর রহমান বলেন, এ বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে। উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীবও বলেন, তিনি এখনো বিষয়টি জানেন না, তবে খোঁজ নিচ্ছেন এবং সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।