আগামী এডিপি ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা: শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ কমছে

print news
img

২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) চূড়ান্ত করেছে পরিকল্পনা কমিশন। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় পাস হওয়া নতুন এডিপির আকার ধরা হয়েছে ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা, যা চলতি বছরের সংশোধিত এডিপি (২ লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকা) থেকে ১৪ হাজার কোটি টাকা বেশি।

তবে এই উন্নয়ন বাজেটে উল্লেখযোগ্য কাটছাঁট এসেছে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে। যেখানে এবারের বাজেটে পাঁচটি প্রধান খাত—পরিবহন ও যোগাযোগ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, শিক্ষা, গৃহায়ণ ও স্বাস্থ্য—মোট এডিপির ৭০ শতাংশের মতো বরাদ্দ পেয়েছে, সেখানে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ কমেছে যথাক্রমে ৯.৪ শতাংশ১২.২ শতাংশ

এডিপিতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব পেয়েছে পরিবহন ও যোগাযোগ খাত, যেখানে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৫৮ হাজার ৯৭৩ কোটি টাকা। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত—যেখানে বরাদ্দ ৩২ হাজার ৩৯২ কোটি টাকা

শিক্ষা খাতে আগামী অর্থবছরে ৯১টি প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ ২৮ হাজার ৫৫৭ কোটি টাকা, যা চলতি বছরের তুলনায় প্রায় ২ হাজার ৯৭১ কোটি টাকা কম। অন্যদিকে, স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ ১৮ হাজার ১৪৮ কোটি টাকা, যা গত বছরের তুলনায় ২ হাজার ৫৩৪ কোটি টাকা কম।

পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ এনইসি সভা শেষে বলেন, “শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বড় অবকাঠামো হয়েছে, কিন্তু প্রয়োজনীয় জনবল নেই। তাই ভবিষ্যতে পরিচালন ব্যয় বৃদ্ধির মাধ্যমে এসব খাতে কার্যকারিতা বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “এ বাজেট শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠার বাজেট। অর্থের পরিমাণ কম হলেও এটি বাস্তবায়নযোগ্য ও টেকসই হবে। বাজেট বাস্তবায়নে আমরা টাকা ছাপিয়ে কাজ করব না, কারণ তা মূল্যস্ফীতিকে প্রভাবিত করে।”

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব অনুযায়ী, এডিপির ১ লাখ ৪৪ হাজার কোটি টাকা স্থানীয় উৎস থেকে এবং ৮৬ হাজার কোটি টাকা প্রকল্প সহায়তা হিসেবে আসবে। এডিপিতে প্রকল্প সংখ্যা ধরা হয়েছে ১ হাজার ১৪২টি

গৃহায়ণ খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২২ হাজার ৭৭৬ কোটি টাকা, স্থানীয় সরকার ও পল্লি উন্নয়নে ১৬ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা, কৃষিতে ১০ হাজার ৭৯৫ কোটি টাকা, পরিবেশ ও জলবায়ুতে ১০ হাজার ৬৪১ কোটি টাকা, শিল্প ও অর্থনৈতিক সেবায় ৫ হাজার ৩৮ কোটি টাকা, এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতে ৩ হাজার ৮৯৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

ড. মাহমুদ বলেন, “এবারের বাজেট দায়িত্বজ্ঞানহীন নয়। রাজস্ব বাড়ানোর পাশাপাশি টেকসই ব্যবস্থাপনায় গুরুত্ব দেওয়া হবে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *