

আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে বিএনপি-জামায়াতসহ বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা ১০ হাজার ৫০৬টি রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আইন-১ শাখার একজন কর্মকর্তা রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা বাসসকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর ফ্যাসিস্ট শাসনামলে দায়ের হওয়া হয়রানিমূলক মামলাগুলো আইনগত প্রক্রিয়ায় প্রত্যাহারের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট জেলা ম্যাজিস্ট্রেটদের পত্র মারফত এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রত্যাহার প্রক্রিয়ার কাঠামো
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ দুটি কমিটি গঠন করেছে—জেলা পর্যায়ে একটি এবং মন্ত্রণালয় পর্যায়ে আরেকটি।
- জেলা কমিটির সভাপতি থাকবেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, সদস্য সচিব অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এবং সদস্য হিসেবে থাকবেন পুলিশ সুপার ও পাবলিক প্রসিকিউটর।
- মন্ত্রণালয় পর্যায়ের কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল এবং সদস্যসচিব জননিরাপত্তা বিভাগের এক সিনিয়র সহকারী সচিব।
জেলা কমিটি মামলাগুলোর প্রাথমিক যাচাই শেষে মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ পাঠাবে। এরপর মন্ত্রণালয় পর্যায়ের কমিটি যাচাই করে তালিকা অনুমোদন দেবে এবং চূড়ান্তভাবে প্রত্যাহারের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আবেদনের সুযোগ ও প্রক্রিয়া
২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত দায়ের হওয়া রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলার শিকার যে কেউ এই সুবিধার জন্য আবেদন করতে পারবেন। আবেদনপত্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মামলার এজাহার এবং অভিযোগপত্রের সত্যায়িত অনুলিপি সংযুক্ত করতে হবে। আবেদন করা যাবে সরাসরি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কিংবা আইন মন্ত্রণালয়ের সলিসিটরের বরাবর।
বিশ্লেষকদের মতে, এই সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক সমঝোতার একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। একই সঙ্গে এটি আইনের অপব্যবহারের মাধ্যমে বিরোধী দলীয় কর্মীদের দমন নীতির বিরুদ্ধে একপ্রকার প্রশাসনিক স্বীকৃতি হিসেবেও দেখা হচ্ছে।